ঈদ মুসলমানদের প্রধান উৎসব। মুমিন মুসলমানরা প্রতি বছরে দুটি ঈদ উদযাপন করে থাকেন। সে কারণে অনেকেই আছেন ঈদের নামাজের নিয়ম ভুলে যান। ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম?
ঈদের দিন যথাযথ ভাবে ঈদের নামাজ পড়ার জন্য ঈদের নামাজের নিয়ম ও প্রস্তুতির বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো এই পোস্টের মাধ্যমে।
ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম?
ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। ঈদের নামাজ ছাদবিহীন খোলা জায়গায় আদায় করা সুন্নাত। রাসুল (সাঃ) খোলা জায়গায় ঈদের নামাজ আদায় করতেন। যদি খোলা স্থানের ব্যবস্থা না থাকে তবে মসজিদেও ঈদের নামাজ পড়া যাবে।
ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ঈদের নামাজ খোলা জায়গা, মসজিদ কিংবা বাসা-বাড়ি যেখানেই পড়া হোক না কেন, অবশ্যই তা জামাআতের সঙ্গে পড়তে হবে। তা না হলে ঈদের নামাজ আদায় হবে না।
ঈদের নামাজ আদায় করার জন্য যেসব শর্ত প্রযোজ্য
ঈদের নামাজ ঈদের নামাজের জন্য কোনো আজান ও ইকামত নেই। তবে জুমআর নামাজের মতোই উচ্চ আওয়াজে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়।
ঈদের নামাজ ও জুম্মার ঈদের নামাজের জন্য
পার্থক্য হলো অতিরিক্ত ৬ তাকবির।
প্রথম রাকাআতে “আল্লাহু আকবার” বলে হাত বেঁধে অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে সুরা ফাতিহা পড়া।
দ্বিতীয় রাকাআতে সূরা মিলানোর পর অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে রুকতে যাওয়া।
ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম?
ঈদের দুই রাকাআত ওয়াজিব নামাজ অতিরিক্ত ৬ তাকবিরের সঙ্গে পড়তে হবে।
প্রথম রাকাআক
১. তাকবিরে তাহরিমা ঈদের নামাজে নিয়ত করে তাকবিরে তাহরিমা ”আল্লাহু আকবার” বলে হাত বাঁধা।
২. ছানা পড়া “সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।
৩. অতিরক্তি তিন তাকবির দেয়া। এক তাকবির থেকে আরেক তাকবিরের মধ্যে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় বিরত থাকতে হবে।
প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবিরে উভয় হাত উঠিয়ে তা ছেড়ে দেয়া এবং তৃতীয় তাকবির দিয়ে উভয় হাত বেধেঁ নেয়া।
৪. আউজুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ পড়া
৫. সুরা ফাতেহা পড়া
৬. সুরা মিলানো।
অতপর নিয়মিত নামাজের মতো রুকু ও সেজদার মাধ্যমে প্রথম রাকাআত শেষ করা।
দ্বিতীয় রাকাআত
১. বিসমিল্লাহ পড়া
২. সুরা ফাতেহা পড়া
৩. সুরা মিলানো।
৪. সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত ৩ তাকবির দেয়া।
প্রথম রাকাআতের মতো দুই তাকবিরে উভয় হাত কাধ বরাবর উঠিয়ে ছেড়ে দেওয়া অতপর তৃতীয় তাকবির দিয়ে হাত বাঁধা।
৫. তারপর রুকুর তাকবির দিয়ে রুকুতে যাওয়া।
৬. সেজদা আদায় করে তাশাহহুদ, দরূদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।
তারপর খুতবা ঈদের নামাজ আদায় করার পর ইমাম খুতবা দেবে আর মুসল্লিরা খুতবা মনোযোগের সঙ্গে শুনবে।
অবশ্য অনেকে খুতবা না দেয়ার ব্যাপারে শিথিলতার কথা বলেছেন। খুতবা না দিলেও ঈদের নামাজ আদায় হয়ে যাবে বলে মত দিয়েছেন।
অতিরিক্ত তাকবিরের ক্ষেত্রে অন্যান্য মাজহাবসহ অনেকেই প্রথম রাকাআতে তাকবিরে তাহরিমাসহ ৭ তাকবির আর দ্বিতীয় রাকাআতে ৫ তাকবিরে দিয়ে থাকেন। এতে কোনো অসুবিধা নেই।
আপনারা যদি মসজিদ ছাড়াও বাসা-বাড়িতেও ঈদের নামাজ আদায় করতে চান তাহলে তা করা যাবে। তবে শর্ত হলো তা জামাআতে আদায় করা এবং খুতবা দেওয়া।
আর ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য ইমাম ছাড়া ন্যূনতম তিনজন মুসল্লি হতে হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথ নিয়মে ঈদের নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। ঈদের নামাজ আদায়ে যথাযথ নিরাপত্তা বজায় রেখে সুস্থ থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।