নিষিদ্ধ সময়ে নামাজ জেনে নিন

ইমানের পর ইসলামের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ আমল হলো সালাত। সালাত ইসলামের প্রাণ। মুমিন এবং কাফেরের মাঝে বড় পার্থক্য হলো নামাজ। নিষিদ্ধ সময়ে নামাজ?

পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ ছাড়াও নানান রকমের নফল নামাজ পড়ার বিধান ইসলামী শরিয়তে রয়েছে।

এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা আপনাদের জন্য তুলে ধরেছি কখন নামাজ পড়া যাবে না, কখন নামাজের নিষিদ্ধ সময় সে সম্পর্কিত বিষয়।

নিষিদ্ধ সময়ে নামাজ

রাসূল (সা.) বলেছেন- “ফরজ নামাজের ঘাটতি থাকলে নফল নামাজ তা পূরণ করে দেয়। তাই তোমরা বেশি বেশি নফল নামাজ পড়”।

তিনি আরো বলেছেন বেশি বেশি করে নফল নামাজ পড় কারণ নফল নামাজের কোন নিদিষ্ট রাকাত নেই এবং সময়ও নির্দিষ্ট করে নেই। যত ইচ্ছা তত রাকাত নফল নামাজ আদায় করা যায়।

কিন্তু ফরজ নামাজের রয়েছে নির্দিষ্ট সময় ও নির্দিষ্ট রাকাত। তিনটি সময় পড়ে সব সময় নফল নামাজ নফল ইবাদাত করা যায়।

নিষিদ্ধ সময়ে নামাজ

নামাজের নিষিদ্ধ সময় হলো তিনটি

১. সূর্যোদয়ের পর থেকে এশরাকের আগ পর্যন্ত: সূর্য উঠার শুরু থেকে হলুদ আলো পুরোপুরি দূর না হওয়া পর্যন্ত সময়টুকুতে সব ধরনের নামাজ পড়া নিষেধ। ফকিহরা গবেষণা করে দেখেছেন সূর্য উঠার পর হলুদ আলো দূর হতে ২০ মিনিট সময় লাগে। অর্থাৎ আবহাওয়া অফিস যদি বলে, সকাল ছয়টায় সূর্য উঠবে, তার মানে ৬টা ২০ পর্যন্ত সব ধরনের নামাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।

২. সূর্য যখন মাথার ওপরে: সূর্য যখন ঠিক মাথার ওপরে থাকে তখনও সব ধরনের নামাজ এবং সেজদা করা নিষেধ। আরবি ভাষায় এ সময়কে ‘জাওয়াল’ বলে। যখন সূর্য একটু হেলে পড়বে তখন জোহরের ওয়াক্ত শুরু হয়। এ সময় সব ধরনের নামাজ এবং সেজদা করা জায়েজ। সূর্য মাথার ওপর থেকে হেলে পড়তে বেশি সময় লাগে না। ফকিহরা সতর্কতাবশত সূর্য মাথার ওপরে উঠার পাঁচ মিনিট আগে এবং পাঁচ মিনিট পর পর্যন্ত নামাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন।

৩. সূর্য ডোবার সময়: সূর্য যখন হলুদ বর্ণ ধারণ করে ডুবতে শুরু করে তারপর সূর্যোদয় পর্যন্ত সব ধরনের নামাজ পড়া নিষেধ।

নিষিদ্ধ সময়ে নামাজ

সাহাবি উকবা বিন আমের আল জুহানি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন- “রাসূল (সা.) আমাদের তিন সময়ে নামাজ এবং মৃতদের দাফন করতে নিষেধ করেছেন”।

  • সূর্য উঠার সময়, যতক্ষণ না তা পুরোপুরি উঁচু হয়ে যায়।
  • সূর্য মাথার উপরে যখন ওঠে তখন থেকে পশ্চিমে হেলে পরার সময় পর্যন্ত। 
  • সূর্য হলুদবর্ণ হওয়ার পর থেকে ডোবার আগ পর্যন্ত।

এ তিন সময় নামাজ পড়া নিষেধ হওয়ার কারণ সম্পর্কে জ্ঞানীরা বলেছেন, সূর্য যখন ওঠে, যখন মাথার ওপর ওঠে এবং যখন ডুবে যায়- এ তিন সময় সূর্য পূজারিরা সূর্যকে সেজদাহ করে।

তখন কেউ যদি নামাজ পড়ে তাহলে তাকেও সূর্য পূজারি মনে হতে পারে। এ জন্য এ সময় সব ধরনের নামাজ পড়া এবং সেজদাহ করা ইসলামী শরিয়ত মাকরুহে তাহরিমি তথা নিষেধ মনে করে।

এ তিন সময়ে কোন ব্যক্তি নামাজ তো দূরের কথা এমনকি তিলাওয়াতে সেজদাহ করাও নিষেধ। জানাজার নামাজ এবং মৃতকে দাফন করাও নিষেধ। তবে মৃতকে তাড়াতাড়ি দাফন করার প্রয়োজন হলে জানাজা পড়িয়ে দাফন করার অনুমতি আছে।