নারী পুরুষ উভয়ের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ একটি ফরজ ইবাদত। তাই পুরুষদের পাশাপাশি নারীকেও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা অবশ্যক। মেয়েদের নামাজ পড়ার নিয়ম?
মেয়েদের নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম জানা অতি জরুরী একটি বিষয়। তাই আমরা আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে নিয়ে এসেছি মেয়েদের নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম।
প্রিয় নবী (সাঃ) বলেছেন- “কেয়ামতের দিন বান্দার সর্বপ্রথম যে আমলের কথা হিসাব নেওয়া হবে সে আমলটি হলো নামাজ”।
নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য বাধ্যতামূলক ইবাদত হলো প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া। নারীরা কিভাবে নামাজের জন্য দাঁড়াবে, কিভাবে হাত বাধবে, রুকু সেজদা করবে সে সম্পর্ক বিষয়বস্তু নিয়ে আজ আমরা হাজির হয়েছি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে।
মেয়েদের নামাজের সঠিক বর্ণনা
মেয়েদের নামাজের জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম পরিষ্কার জামা কাপড় পড়ে, নামাজের জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন তা জায়গা খুঁজে নামাজে দাঁড়াতে হবে।
আপনাকে আপনার সতর ঢাকা আছে কিনা তা খেয়াল করতে হবে। নারীদের সতর বলতে হাত-পা এবং মুখ ব্যতীত সবকিছু ঢেকে রাখাতে হবে।
এসব ঠিক তাহলে প্রথমত আপনাকে কেবলার দিকে মুখ করে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। নামাজের সময় আপনার চোখ আপনার সেজদার দিকে রাখতে হবে।
আর আপনার পায়ের আঙ্গুল গুলো সোজা ক্বিলার দিকে রাখতে হবে। নামাজের সময় মেয়েদের পায়ের আঙ্গুল যথাসম্ভব কাছাকাছি রাখা উচিৎ।
মেয়েদের নামাজ পড়ার নিয়ম
তাকবীরে তাহরীমা বাঁধা
এ সময় মেয়েদের দুহাত কান বরাবর সমান উচ্চতায় তুলবে এবং দুই হাতের আঙ্গুলগুলো কাছাকাছি রাখতে হবে। আর দুচোখ সেজদার স্থানে রাখতে হবে। তাকবীরে তাহরীমার দোয়া “আল্লাহু আকবর”
সানা পড়া
এ সময় মেয়েরা দুহাত বুকের উপর সমান করে বাঁধবে। ডান হাত বাম হাতের উপরে থাকবে। হাতগুলো সমান অবস্থায় থাকবে।
সানা শেষে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে পাঠ করতে হবে। তারপর রুকুতে যেতে হবে।
রুকু
রুকুতে এসে মেয়েরা এই পরিমাণ ঝুকবে। যাতে তার আঙ্গুল দিয়ে হাটু স্পর্শ করা যায়। আঙ্গুল দিয়ে হাটু স্পর্শ করার পর আঙ্গুলগুলো যেন ছড়িয়ে না থাকে সমানভাবে পাশাপাশি থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
রুকু থাকা অবস্থায় দুই চোখ পায়ের আঙ্গুলের দিকে থাকবে, এবং নিম্নোক্ত দোয়াটি তিনবার পড়বে।
ক্বিয়ামাহ
ক্বিয়ামাহ মানে হচ্ছে রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো এবং সেজদায় যাওয়ার পূর্বাবস্থা।
সেজসা
মেয়েরা সেজদায় যাওয়ার সময় প্রথমে হাত তারপর নাক এবং সর্বশেষে কপাল মাটিতে স্পর্শ করবে। চোখ নাখের দিকে রাখতে হবে।
মেয়েদের তখন বাহু, হাটু, পা সকল অঙ্গ যথা সম্ভব একে অপরের ভূমির কাছাকাছি রাখতে হবে। পায়ের আঙ্গুল গুলো কিবলামুখি রাখতে হবে।
সেজদার দোয়া কম পক্ষে কমপক্ষে তিনবার পড়তে হবে যদি আপনি চান তাহলে আরও বেশি পড়তে পারেন।
প্রতি রাকাতে মোট আপনাকে দুইটি সেজদা দিতে হবে। পরিপূর্ণভাবে দেওয়া হয়ে গেলে আপনাকে পুর্ণরায় সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে।
আর যথারীতি ভাবে আরেকটি রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতের জন্য আপনাকে দাঁড়িয়ে শুধুমাত্র সূরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরা তেলাওয়াত করে ঠিক একই ভাবে রুকু সেজদা আগের নিয়মে সম্পূর্ণ করতে হবে।
তবে আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে দ্বিতীয় রাকাতে সেজদা শেষে সরাসরি উঠে যাওয়া যাবে না। আপনাকে সেজদা শেষে বসে দুই রাকাত বিশিষ্ট নামাজ হলে শেষ বৈঠকে তিনটি দোয়া পড়তে হবে।
প্রথমে আপনাকে পড়তে হবে তাশাহুদ, তারপর আপনাকে পড়তে হবে দুরুদ শরীফ, সর্বশেষে আপনাকে পড়তে হবে দোয়া মাসুরা। পড়া শেষ হয়ে গেলে আপনাকে ডানে বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে।
আশা করি আমাদের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনারা দুই রাকাত বিশিষ্ট মেয়েদের নামাজের নিয়ম জানতে পেরেছে।
আল্লাহ আমাদের সঠিকভাবে নামাজ সম্পর্কে জেনে নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আমাদের উচিৎ নামাজ সম্পর্কে সঠিক ভাবে জেনে নামাজ আদায় করা।